ললিতাদের মুক্তি

মুক্তির গান (মার্চ ২০২৪)

মোহাম্মদ শাহজামান
  • 0
  • ৬০
ক্লাসের সবচেয়ে বেশি চঞ্চল মেয়ে ললিতা কয়েকদিন যাবত স্কুলে আসে না। বিষয়টি লক্ষ্য করেছে শুভ স্যার। সহপাঠীদের নিকট খোঁজ খবর নিয়েছে শুভ স্যার; তবে সহপাঠীরা জানাল ললিতার অসুখ হয়েছে। প্রায় দু’সপ্তাহ হলো স্কুলে ললিতার দেখা নেই তাই শুভ স্যার সিদ্ধান্ত নিল আগামী শুক্রবার ললিতাদের বাড়ি যাবে।
জুম্মার নামাজ শেষে ললিতাদের বাড়ি হাজির হলো শুভ স্যার। ললিতাদের বাড়িতে মেহমান আসবে তাই মেহমানদের জন্য উঠানে সামিয়ানা টাঙানো হয়েছে; চেয়ার টেবিলে সাজানো হয়েছে; নানান রকমের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। শুভ স্যার দেখে ললিতার বাবা লালমিয়া লজ্জায় লাল হয়ে বললেন, “স্যার আপনি এসেছেন, আজ ললিতাকে দেখতে আসবে ওমরপুর গ্রামের বহরআলীর ছেলে সলিমন’’।
-সলিমন তো বিদেশ গেছে তিন বছর হলো। সে কি দেশে এসেছে?
-জি স্যার। বহরআলীর সাথে আমার কথা হইছে। তাঁর ছেলে পছন্দ করলে আজই বিয়ে।
- সলিমনও আমার ছাত্র। এইচএসসি পাশ করেই বিদেশ গেছে। সলিমনের বিয়ের বয়স হয়েছে। ঠিক আছে কিন্তু আপনার মেয়েরতো বিয়ের বয়সই হয়নি। একটা অপ্রাপ্ত মেয়েকে দ্রুত বিয়ে দিচ্ছেন? যদি থানা পুলিশ জানে তাহলে তো আমাদেরও অসুবিধা হবে। কাজটি আপনি ঠিক করছেন না।
- স্যার, আপনি অমত দিয়েন না। আমি মেম্বারকে বলে থানা পুলিশ ও চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করেছি। শুধু শুধু আমার মেয়ের বিয়ের ঘর ভেঙে আমাকে বিপদে ফেলবেন না।
-কিসের বিপদ? এই বিয়ে বন্ধ করেন। মেয়ের বিয়ের বয়স হোক আর এসএসসিও পাস করুক। তারপরে বিয়ে দেন।
- স্যার আপনার পায়ে পড়ি, আপনি আমার মেয়ের ঘর ভাঙ্গবেন না। গত সপ্তাহে মেয়েকে জীনে ধরেছে। কবিরাজের কাছে গিয়েছি। কবিরাজ ঝাড় ফুঁ দিয়ে একটা তাবিজ দিয়েছে আর বলেছে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতাম।
- জিনে ধরলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সাইকোলজিস্ট ডাক্তার দেখান, দেখবেন ঠিক হয়ে যাবে।
- স্যার ডাক্তার দেখাবো কেন? এটা তো ডাক্তারী বিষয় নয়।
-হ্যাঁ, এটা ডাক্তারই বলে দিবে জিনে ধরেছে না মনের রোগ। আপনি মেয়েকে জিকিৎসা করান। মেয়ে ভাল হয়ে যাবে।
-স্যার, কবিরাজ কইছে, বিয়ে দিলেই ঠিক হয়ে যাবে।
ললিতার বাবা এবং স্যারের কথা বলার সময় ছেলে পক্ষের লোকজন এবং গ্রামের চেয়ারম্যান এসেছে। শুভ স্যার মন মরা হয়ে চলে যাবার সময় সলিমনের সাথে দেখা। সলিমন শুভ স্যারকে সালাম দিল। সলিমনের সাথে কুশল বিনিময় করে শুভ স্যার ললিতাদের বাড়ি থেকে চলে আসল।
সপ্তাহখানেক পর বাজারে সলিমনের সাথে শুভ স্যারের দেখা হলো। সলিমন সালাম দিয়ে বলল, স্যার কেমন আছেন? শুভ স্যার একটু রাগের স্বরে বললেন, ভাল আছি।
- স্যার, আমাকে মাফ করবেন। আমি আব্বা আম্মার কথায় ললিতাকে বিয়ে করেছি। ঐদিন আপনি চলে আসাতে আমি বুঝতে পারছি, আপনি আমার প্রতি রাগ করেছেন। স্যার মুরুব্বীরদের কথায় চুপ করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারিনি। স্যার, আমি আজ আপনার বাড়িতে যাইতাম। বাজারেই দেখা হলো। এটা আমারই সৌভাগ্য। স্যার আমি চাই ললিতা লেখা পড়া চালিয়ে যাক।
- তোমার মা বাবা এবং ললিতার বাবা রাজী আছে তো?
- জি, স্যার। আমি সবাইকে রাজী করাতে সক্ষম হয়েছি। ললিতার খুবই ইচ্ছে সে যেন লেখা পড়া চালিয়ে যেতে পারে। তাই আপনার পরামর্শ একান্ত দরকার।
- মেয়েদের বিয়ে হলে আর তেমন লেখা পড়া হয় না।
- ললিতার খুব ইচ্ছে লেখা চালিয়ে যাবার। ললিতার ইচ্ছে দেখে আমারও আগ্রহ হলো তাকে লেখা পড়া করানো।
- খুবই ভাল প্রস্তাব। তোমার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। ললিতাকে স্কুলে পাঠিয়ে দিও।
কয়েকদিন পর ললিতা স্কুলে আসলো। অন্যান্য ছেলে মেয়ের মতো ললিতাও তাঁর লেখা পড়া আনন্দের সহিত চালিয়ে যাচ্ছে। লেখা পড়াই তাঁর আনন্দ। স্কুলে ফিরে আসা ছিল তাঁর জীবনের অন্ধাকার থেকে আলোতে আসার মুক্তির জয়গান।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মাইদুল সরকার গল্পটা আরেটু বড় হলে ভাল লাগতো।
mdmasum mia আরও ভাল করতে হবে অপশনটা বেছে নিলাম।

লেখার সাথে বিষয়ের সামঞ্জস্যতা ব্যাখ্যায় লেখকের বক্তব্য

ক্লাসের সবচেয়ে বেশি চঞ্চল মেয়ে ললিতা কয়েকদিন যাবত স্কুলে আসে না।

১১ আগষ্ট - ২০২৩ গল্প/কবিতা: ১০ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "ছোটবেলা”
কবিতার বিষয় "ছোটবেলা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ ডিসেম্বর,২০২৪